নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে এক নতুন আশার আলো হয়ে উঠে এসেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ। শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি নিজেকে মানুষের কাতারে নামিয়ে এনেছেন একজন সেবক হিসেবে, যিনি নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করে একটি উন্নত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন দেখেন।
জনগণের কণ্ঠস্বর, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নায়ক:
গত ৫ই আগস্টের পূর্বে নারায়ণগঞ্জের মানুষের জীবনে যে অনিশ্চয়তা ও শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি ছিল, মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ তা গভীর উদ্বেগ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তার মতে, সেই সময়ে মানুষের মনে ছিল এক অজানা শঙ্কা। তবে ৫ই আগস্টের বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের পর কেবল নারায়ণগঞ্জেই নয়, সারা দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পেয়েছে। তিনি এই পরিবর্তনকে “দেশকে অন্ধকার থেকে কিছুটা আলোতে নিয়ে আসার উদ্যোগ” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যদিও তিনি মনে করেন আলো এখনও পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়েনি।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আহ্বান:
‘আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই?’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি অকপটে তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো। যানজট, ফুটপাত দখল, চাঁদাবাজি, আইনের শাসনের অভাব এবং সন্ত্রাস—এসব সমস্যা এখনও বিদ্যমান। তবে মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ মনে করেন, কেবল সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে লাভ নেই, বরং নিজেদেরও ভালো হতে হবে। ঘুষের অবাধ লেনদেন এবং ভ্যাট অফিসের দুর্নীতিকে তিনি দৃঢ়ভাবে সমালোচনা করে বলেন, “আমরা নিজেরা ভালো না হয়ে ভালো নারায়ণগঞ্জ চাইবো এটা অবাস্তব।” তিনি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদেরও (ডিসি, এসপি, সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক) ‘পীর’ আখ্যা দিয়ে তাদের জনগণের প্রতি আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
উন্নয়ন ও নৈতিকতার মেলবন্ধন:
বন্দর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগকালে মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ উন্নয়নের পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ঐতিহ্যবাহী এই বন্দরে অনেক জ্ঞানী গুণী আল্লাহর বান্দা ছিলেন। পূর্বে যারা ছিল তারা উন্নয়নের নামে লুটপাট করে গিয়েছিল।” তিনি বন্দরের প্রধান সড়কের বেহাল দশা এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং কমপক্ষে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দাবি জানান। তার মতে, “আল্লাহর আইন যদি ঠিক থাকে সকল সমস্যার সমাধান হবে। এজন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর আইন এবং সৎ লোকের শাসন চায়।” তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, কোরআনের আইনকে আঁকড়ে ধরলেই রাসূলের দেখানো পথে চলা সম্ভব এবং দেশটাকে ভালো করতে হলে জামায়াতে ইসলামীর মতো দলকে সমর্থন করতে হবে।
ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার:
জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ সদর-বন্দর (৫) আসনের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ নির্বাচনী প্রচারণায় সাধারণ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের সমস্যা শুনছেন এবং নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরছেন। তিনি একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন, যেখানে সকলের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে, বেকারত্ব দূর হবে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হবে। তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের নানা ব্যর্থতা – গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংকট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং দুর্নীতি মহামারী আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থার পরিবর্তনে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রয়োজন।”
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও এতিমদের সেবা:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে তিনি ৪ জুলাই এতিম ও পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, “এতিম অসহায় পথ শিশুদের খাওয়ালে আল্লাহ খুশি হয়। আল্লাহকে পাওয়ার উত্তম মাধ্যম হলো মানুষের কল্যাণে কাজ করা।” তিনি চব্বিশের আন্দোলনে রক্ত দিয়ে যারা দেশটাকে জালিমদের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করেছেন, তাদের বিনয়ের সাথে স্মরণ করেছেন এবং তাদের শহীদি মর্যাদা কামনা করেছেন।
মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে আল্লাহ দেশ পরিচালনার ক্ষমতা দিলে দেশে আর কোনো ধরনের দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। তার দূরদর্শী নেতৃত্ব, জনগণের প্রতি অঙ্গীকার এবং নৈতিকতার ওপর দৃঢ় অবস্থান তাকে নারায়ণগঞ্জের একজন প্রশংসিত ও সম্ভাবনাময় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়ভিত্তিক জনপদ হিসেবে গড়ে উঠবে — এমনটাই প্রত্যাশা করছেন এলাকাবাসী।
এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।