আশুলিয়ার নিশ্চিন্তিপুরে তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছর পূর্তিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণঞ্জ জেলার উদ্যোগে আজ সোমবার সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ, কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সহসভাপতি আনোয়ার খান প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তিপুরে তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে ১১৩ জন শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এরপর ২৪ এপ্রিল ২০১৩ সালে সাভারে রানাপ্লাজা ধ্বসে ১১৩৬ জন মৃতুবরণ করে। এ মৃত্যুর মিছিল এখনও চলছে। ২০২১ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় ৫৪ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ করে। এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটছে, শ্রমিক মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোন মালিকের শাস্তি হয়নি। তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধস, বয়লার বিষ্ফোরণসহ এসব ঘটনার জন্য দায়ী মালিকের অতিমুনাফার লোভ। কারখানাগুলো আইন মানে না, নিরাপত্তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়া দরকার তা করে না। তারপরও মালিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয় না। নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিক সংগঠনগুলোর দীর্ঘ দিনের দাবি আইএলও কনভেনশন ১২১ এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা আইন ১৮৫৫ অনুযায়ী কর্মরত শ্রমিক দুর্ঘটনায় মারা গেলে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দেয়া। কিন্তু আমাদের শ্রম আইনে ক্ষতিপূরণ মাত্র ২ লাখ টাকা। বর্তমান সরকার যে নতুন শ্রম আইন করেছে সেখানে এ আইন সংশোধন করা হয়নি। তাজরীন, রানাপ্লাজা, সেজান জুস এর মতো ঘটনা বন্ধ করতে হলে মালিককে সর্বোচ্চ শাস্তি ও আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণের বিধান করতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারকে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা জীবন দিয়ে হটিয়েছে। ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের পর অর্ন্তবর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। একটি শ্রম সংস্কার কমিশন করা হয়েছিল তার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোন আলোচনা নেই। এ সরকারের দায়িত্ব ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা দেখতে পাই এসরকারও শ্রমিক আন্দোলন বন্ধে শ্রমিকের উপওে গুলি চালিয়ে ৫ জন শ্রমিক হত্যা করেছে। এ সরকারের সময়ে তাজরীন, রানাপ্লাজা হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোন অগ্রগতি হয়নি। নেতৃবৃন্দ বলেন, অভ্যূত্থানের পরে ২ শতাধিক কারখানা বন্ধ হয়েছে, লক্ষাধিক শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। কারখানাগুলোতে এখনও চলছে শ্রমিক ছাঁটাই, প্রাপ্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে শ্রমিকদের কারখানা থেকে বের করে দেয়া, এখনও অনেক গার্মেন্টসে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এ বিষয়ে শ্রমিকরা আন্দোলন করলে স্বৈরাচারী সরকারের সময়ের মতো করেই মালিকরা শ্রমিক নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়, গ্রেফতার করে। দমন-পীড়নের পথেই আন্দোলন দমন করা হয়। নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের নিরাপত্তা, আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান, তাজরীনসহ বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ও ভবন ধসে শ্রমিক হত্যার জন্য মালিক ও সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।
