নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা নয়ন মিয়া,গত মে মাসে শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার রূপবাবুর হাট ইউনিয়নের শিং কান্দি পূর্ব নাওডোবা গ্রামের খাদিজা বেগমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এখন এক গভীর সামাজিক ও আইনি সংকটের মধ্যে রয়েছেন। তাঁর স্ত্রীর অবৈধ পরকীয়ার কারণে সে এখন শুধু তার স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতার শিকার নন, বরং তার জীবন ও পরিবারও হুমকির মধ্যে রয়েছে।
নয়ন মিয়া জানিয়েছেন, বিয়ের পরের দিন থেকেই খাদিজা তার স্বামীর বাড়ি না থেকে তার বাবার বাড়ি শরিয়তপুর যেতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। একপর্যায়ে, খাদিজা স্বামীকে নিয়ে শরিয়তপুর গেলে সে জানায় যে সে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তবে খাদিজার পরিবার বিষয়টি দ্রুত ধামাচাপা দিয়ে তাকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। তারপর থেকেই খাদিজা স্বামীর বাড়ি ফেরত আসতে অস্বীকার করতে থাকে এবং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে থাকে, এমনকি এসব ছবি ফেসবুকে পোস্টও করে। নয়ন মিয়া তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক এবং আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে বিচার চাইলেও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু, খাদিজার পরিবারের জন্য পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে ওঠে। খাদিজার পরিবার, তার অবৈধ পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে সমঝোতার পরিবর্তে, নয়ন মিয়া এবং তার পরিবারের কাছে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায়, খাদিজার পরিবার ৫-৬ জন সন্ত্রাসী নিয়ে নয়ন মিয়ার বাসায় হামলা চালায়। হামলার সময় তারা নয়ন মিয়ার মা মনেক্কা বেগমকে মারধর করে এবং বাসা থেকে মোবাইল ফোন, সোনা গহনা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
নয়ন মিয়া অভিযোগ করেন, হামলার পর থেকে খাদিজার পরকীয়া প্রেমিক সাঈমন মোবাইলে নয়ন মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এমনকি, সে তাদেরকে জীবননাশের হুমকিও দেয়। সাঈমনের এই আচরণ মানসিক নির্যাতন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের শামিল, যা একটি গুরুতর অপরাধ। এ বিষয়ে মনেক্কা বেগম বাদী হয়ে ৫ জন সন্ত্রাসীকে নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন, যার মামলা নং ৪৩/২৫। আইনজীবী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে এই হামলা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তারা বলছেন, “এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং মানসিক নির্যাতন শুধু আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ নয়, বরং একটি নৈতিক দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে। যে কোনো ব্যক্তির মৌলিক অধিকার এবং নিরাপত্তা রক্ষায় এই ধরনের অপরাধে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
নয়নের পরিবারও আইনি লড়াইয়ে সাহসী। তাদের আশা, আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং তাদের নিরাপত্তা রক্ষা হবে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে এবং সন্ত্রাসী হামলার সাথে যুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে, আইনজীবী ও স্থানীয় জনগণ মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা সমাজের মানসিক অবস্থা এবং সম্পর্কের প্রতি গভীর ভাবনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এই ধরনের ঘটনার মোকাবেলায় আইনগত সুরক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা জরুরি: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনায় শুধু আইনের সঠিক প্রয়োগ নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। একদিকে যেখানে নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে, অন্যদিকে আইনি ব্যবস্থা যেন সঠিকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
এখন প্রশ্ন, আইনের চোখে এই হামলা ও হুমকির ঘটনায় কি দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে? এটির উত্তর সময়ই দেবে, তবে সাধারণ জনগণের মধ্যে আইনকে গ্রহণ করার মানসিকতা এবং তার প্রতি বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করছে এই ধরনের ঘটনা কিভাবে শেষ হয়।
এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।