ঢাকাশুক্রবার , ২৭ জুন ২০২৫
  1. আজ দেশজুড়ে
  2. আজকের সর্বশেষ
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি সংবাদ
  5. খাদ্য ও পুষ্টি
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম
  9. চাকরি-বাকরি
  10. ছড়া
  11. জাতীয়
  12. জীবনযাপন
  13. ঢাকা
  14. তথ্যপ্রযুক্তি
  15. ধর্ম
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পিলখানায় সংগঠিত হত্যাকান্ড বিষয়ক স্বাধীন তদন্ত কমিশনের কাছে মির্জা আজম এর বক্তব্য

মোঃ ইমরান হোসেন
জুন ২৭, ২০২৫ ৬:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মির্জা আজম, পিতা- মরহুম মির্জা আবুল কাশেম, মাতা-মোছাঃ নূরুন্নাহার বেগম, ঠিকানা- মেডিকেল রোড, জামালপুর। আমি জামালপুর-৩ আসন (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) থেকে ৭ (সাত) বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ১৯৯১ সনে পঞ্চম জাতীয় সংসদের সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হই। ১৯৯৬ সনে ৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হই। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদেও বিরোধী দলীয় হুইপ এর দায়িত্ব পালন করি। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় সংসদের হুইপ এর দায়িত্ব পালন করি। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করি। সর্বশেষ ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সপ্তম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই।

আমি ১৯৭৬ সাল থেকে স্কুল এর ছাত্র থাকা অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেই। জেলা ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজ ছাত্র সংসদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করি। ১৯৮৬ সালে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, পরবর্তীতে জেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির একমাত্র সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ৯ (নয়) বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করি। ১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম সম্পাদক এবং ১৯৯৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করি। ২০১২ সাল থেকে ৩ (তিন) বার কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগ সদস্য এবং ২০১৯ সাল থেকে দুই মেয়াদে অদ্যোবধি পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। ২০০৯ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারী আমি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় সংসদের হুইপ এর দায়িত্বে ছিলাম, একাধারে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলাম। জনাব জাহাঙ্গীর কবির নানক তখন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০০৯ সালে আমি সকাল নয়টায় সংসদ থেকে হুইপের কার্যালয়ে নির্বাচনী এলাকার জনগণের সাথে সাক্ষাত প্রদানের জন্য ছিলাম। সকাল দশটার দিকে যুবলীগের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আমাকে ফোন করে জানায় পিলখানায় বিডিআর অভ্যন্তরে গোলাগুলি হচ্ছে, এখনই যমুনায় যেতে বলে।

আমি সাড়ে দশটার দিকে যমুনায় পৌঁছাই। তখন যমুনায় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও সিনিয়র মন্ত্রীবৃন্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করছিলেন। বিডিআরের খবর নেয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় কথা বলছিলেন। ২/৩ ঘন্টা খোঁজ খবর নেয়ার পর সবার উদ্দেশ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন বিডিআর এর ডিজি জেনারেল শাকিল সহ সেনা অফিসার ও তাঁদের পরিবারবর্গের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য যারা বিদ্রোহ করেছে যেভাবেই হউক তাঁদের সাথে যোগাযোগ করে আলোচনার টেবিলে বসার ব্যবস্থা করা দরকার। আপনারা কয়েকজন গিয়ে চেষ্টা করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন, কিন্তু কেউ এই দায়িত্ব নেয়ার জন্য আগ্রহ না দেখালে তিনি দোতলায় চলে যান। কিছুক্ষণ পর জেনারেল তারিক সিদ্দিকি এসে নানক ভাই এবং আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডেকেছেন বলে জানালেন। আমরা দোতলায় গেলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বললেন, দেখলেতো, আমি একটি কথা বললাম অথচ কেউ সাড়া দিলো না। কিছুক্ষণ কথা বলার পর আমাদের বললেন তোমরা গিয়ে চেষ্টা কর বিদ্রোহীদের আলোচনার টেবিলে বসানো যায় কি-না। আমরা নেত্রীর পায়ে সালাম করে বিদায় নিলাম। নিচে নেমে জানলাম সেনাপ্রধান যমুনায় এসেছেন। আমরা দুইটার দিকে পিলখানার উদ্দেশ্যে বের হলাম। আমরা দুইজন যখন পিলখানার দিকে যাই সিটি কলেজ মোড়ে ব্যারিকেড সরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ফুটপাত দিয়ে সামনে এগোতে থাকি। মাঝে মাঝে মুর্ছমূহু গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো।

আমরা যখন যাচ্ছিলাম অনেক সাংবাদিক ক্যামেরাম্যান এবং সাধারণ মানুষ আমাদের পিছনে পিছনে এগোচ্ছিলো। বিডিআর গেইটের কাছাকাছি আম্বালা রেষ্টুরেন্ট পর্যন্ত গেলে আর সামনে যাওয়া নিরাপদ নয় ভেবে সেখানে গিয়ে আলোচনা করে বুদ্ধি বের করার চিন্তা করতে থাকি। তখন আমাদের সাথে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, পুলিশের আইজি নুর মোহাম্মদ, ডিএমপি কমিশনার নাঈম সাহেব সহ অনেক সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ আমাদের সাথে অবস্থান করছিলেন। পরে জানতে পেরেছি আইজি সাহেবের মেয়ে ও সেনা কর্মকর্তা জামাই ভিতরে আছেন। নানক ভাইয়ের গাড়িতে একটি হ্যান্ড মাইক ছিল। মাইকে আমি এবং নানক ভাই বলতে থাকি, আমাদের মোবাইল ফোন নাম্বার বলতে থাকি, বিডিআর সদস্যদের সাথে কথা বলতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলতে থাকি, আপনাদের সাথে আলোচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাঠিয়েছেন। অনেকক্ষণ কোন সাড়া না পেয়ে আমরা হ্যান্ড মাইকের পরিবর্তে বড় মাইকের জন্য বললে ডিএমপি কমিশনার নাঈম সাহেব দশ মিনিটের মধ্যে একটি বড় মাইক ব্যাটারী যন্ত্র সহ এনে হাজির হলেন। আমরা আবার মাইকে ঘোষণা দিতেথাকলাম। আমাদের ফোন নাম্বারে ফোন দেয়ার জন্য আহবান জানাতে থাকলাম। তখন বাংলাদেশের সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ক্যামেরা সহ আমাদের সাথে ছিল এবং তাঁরা জাতীয় প্রচার মাধ্যম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছিল। ইতোমধ্যে আমাদের দেয়া ফোন নাম্বারে বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন আসতে থাকে। কিন্তু কোন বিডিআর সদস্যের ফোন পাচ্ছিলাম না। আমরা মাইকে ঘোষণা করতেই থাকলাম। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে এক বিডিআর সদস্য আমাদের ফোনে কল দেয়। আমরা তখন তাঁকে আমাদের কথা বললাম যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের সাথে কথা বলতে চান আপনাদের দাবী দাওয়া নিয়ে। সেই বিডিআর সদস্য সবার সাথে আলোচনা করে একটু পরে আমাদের ফোন দিবে বলে সময় নেন। বিকাল চারটার দিকে আবার আমাদের ফোনে ফোন দিয়ে বলে তাঁদের সবাই বিডিআর গেইটে আছে, আমাদের গেইটে যেতে বলে। আমরা গেলে আমাদের কোন সমস্যা হবে কি-না জানতে চাইলে আমাদের বলে আমাদের কোন সমস্যা হবেনা। তারপর আমাদের পিছনে এক লোক তার হাতে সাদা কাপড়ের ব্যাগ ছিল। নানক ভাই সেই লোকের কাছ থেকে ব্যাগটি চেয়ে নিয়ে ব্যাগটি ছিঁড়ে কাপড়ের কিছু অংশ আমাদের উপরে থাকা আম গাছের একটি ডাল ভেঙ্গে সেই ডালের সাথে সাদা কাপড়টি বেঁধে পতাকার মত বােিনেয় সাদা পতাকা হাতে হ্যান্ড মাইকে কথা বলতে বলতে আমরা আম্বালা রেষ্টুরেন্ট থেকে বিডিআর গেইটের দিকে এগোতে থাকি।

তখন আমাদের সাথে শত শত সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ ছিল। গেইটের কাছাকাছি গেলে হঠাৎ একজন সশস্ত্র বিডিআর সদস্যের “গুলি করে দিলাম গুলি করে দিলাম” এমন কথা শুনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। পরে দেয়ালের একটি ভাঙ্গা অংশ দিয়ে একজন বলছে আপনারা আসেন কিন্তু ঐ সাংবাদিকদের আসতে না করেন। পিছন ফিরে দেখি সব ক্যামেরাম্যানরা পিছনে আসতেছে। এই কথা শুনে ক্যামরোম্যানরা দাঁড়িয়ে যায়। তৎকালীন ভিডিও ফুটেজ দেখলে প্রমাণ হবে। আমরা গেইটের সামনে পৌঁছার একটু পরে আমাদের এম.পি.ওয়ারিশ আলী বেলাল ও এম.পি. মাহবুব আরা গিনি তাঁরাও জিগাতলার দিক থেকে আমাদের সাথে আসে। আমরা যখন গেইটের বাইরে থেকে বিডিআর সদস্যদের সাথে কথা বলি তখন জিগাতলার দিক থেকে সাধারণ মানুষ এবং মিডিয়ার ক্যামেরা সব ভিডিও করছিল বিডিআর গেইটে। পরে জানতে পারি এটা মিডিয়াতে লাইভ সম্প্রচার হয়েছে। বিডিআরদের সাথে প্রায় ১৫/২০ মিনিট কথা বলার পর তাঁরা একমত হয় যে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার জন্য যমুনায় যাবে। আমাদের ১০ মিনিট পর আসতে বললে আমরা আবার আম্বালা রেষ্টুরেন্টে ফিরে আসি এবং অপেক্ষা করতে থাকি। কিছুক্ষণ পর আমাদের ফোন দেয়। আমার সংসদের হুইপের জীপ ও নানক ভাইয়ের প্রাইভেট কারে প্রায় ১৩/১৪ জন বিডিআর সদস্যদের বিডিআর গেইটের বাইরে থেকে নিরস্ত্র অবস্থায় বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে তাঁদের নিয়ে যমুনার দিকে রওয়ানা হই। যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার শুরুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কাছে জানতে চান ডিজি শাকিল সহ সেনাবাহিনীর অফিসাররা কেমন আছে? জবাবে তাঁরা বলে সবাই ভালো আছে। আলোচনার পর একমত হয় কোন সেনা অফিসার বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কোন প্রকার ক্ষতি তাঁরা করবে না। তাঁরা সারেন্ডার করবে, পরে তাঁদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। অতপর রাত আট-টার দিকে যমুনা থেকে আমাদের গাড়ি করেই তাঁদের বিডিআর গেইটে নামিয়ে দেই। যখন তাঁদের নামিয়ে দেই তখনো বিডিআর গেইটে শত শত সাংবাদিক ক্যামেরা সহ উপস্থিত ছিল। আমরা বিডিআর সদস্যদের গেইটে নামিয়ে দেয়ার পর আম্বালা রেষ্টুরেন্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, এডভোকেট কামরুল ইসলাম সহ অনেক কেন্দ্রিয় নেতা মন্ত্রী এম.পি. পুলিশ অফিসার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা অপেক্ষা করতে থাকে। অপেক্ষা করতে করতে রাত দুইটা নাগাদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম ও আইজি নূর মোহাম্মদ বিডিআর পিলখানায় প্রবেশ করে।

বিডিআর জোয়ানরা আত্মসমর্পন করে যা মিডিয়াতে প্রচার করা হয়। আত্মত্মসমর্পনের পর অনেক সেনা অফিসারের পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বের হয়ে আসেন। ২৬ ফেব্রুয়ারী-০৯ সকাল ১০ টা থেকে সরকারের অনেক মন্ত্রী এম.পি, কেন্দ্রিয় নেতারা এবং সেনা গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, সকল গোয়েন্দা সংস্থা সহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ আম্বালা রেষ্টুরেন্টে আবার অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু বিডিআর সদস্যরা কাউকে ভিতরে যাওয়ার জন্য ফোন করছিল না। পরে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে সবাইকে আত্মসমর্পন না করলে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয়া হয়। বিকাল সাড়ে চারটা নাগাদ খবর পাওয়া গেল অধিকাংশ বিডিআর সদস্যরা দেওয়াল টপকে পালিয়ে গেছে। বাকীরা আত্মসমর্পন করেছে এবং জানতে পারলাম সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও সদস্যরা পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বিকাল ০৫:০০ টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, নানক ভাই এবং আমাকে বলে আমার সাথে চলো, অনেক সেনা অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা যারা আছে তাঁদের উদ্ধার করতে হবে। পুলিশ সদস্যরা একটি খোলা জীপে মাইক লাগিয়ে রেখেছিল। সেই গাড়িতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, নানক ভাই এবং আমি উঠি। আমরা মাইকে প্রচার করতে থাকি। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আত্মত্মসমর্পন করেছে, সেনা অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্য আপনারা কেউ কোথাও প্রাণভয়ে আত্মগোপনে থাকলে নির্ভয়ে বেরিয়ে আসুন, আমরা আপনাদের উদ্ধার করার জন্য এসেছি। বিকাল পাঁচটার পর থেকে রাত আট/সাড়ে আট টা পর্যন্ত কয়েকজন সেনা অফিসার বেরিয়ে আসে যাদের আমরা তাঁদের নিজ নিজ বাসায় পাঠানোর ব্যবস্থা নেই। হাসপাতাল থেকেও কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বেশকিছু সেনা পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করা হয়। রাত সাড় আট টার দিকে আমরা পিলখানা থেকে বের হয়ে আসি। বের হওয়ার সময় গেইটে সাংবাদিকরা আমাদের সাথে কথা বলে। ২৭ ফেব্রয়ারী ২০০৯ সালে সকাল দশটার দিকে নানক ভাই আমাকে বিডিআর এর গেইটে যেতে বলে। ব্রিগেড কমান্ডার নানক ভাইকে ফোন করেছিল। আমরা যখন বিডিআরে যাই গেইটের পাশে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে সেনা কর্মকর্তারা পুরো মানচিত্র নানক ভাইকে দেখান। অনেক সেনা অফিসারকে পাওয়া যায় নাই, তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে। কিছুক্ষণ পর খবর এলো এক জায়গায় নতুন মাটি ফেলা হইছে। সেই জায়গায় মাটি খোড়ার ব্যবস্থা নিলো সেনা সদস্যরা। কিছু মাটি খোড়ার পরই ঐ গর্ত থেকে লাশ পাওয়া গেল। একের পর এক লাশ তোলা হচ্ছিলো, অনেক সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যরা লাশ উত্তোলন করেছিল। কয়েকজনের লাশের বিভৎস রূপ দেখে আর স্বাভাবিক থাকতে না পেরে আমরা দুইজন একটার দিকে চলে আসি। আমি মির্জা আজম আপনার কমিশন বরাবরে বক্তব্য প্রদান করার জন্য বলিলে উপরোক্ত বক্তব্য সমূহ প্রদান করিলাম। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী।

তৎকালীন ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি এবং জনাব জাহাঙ্গীর কবির নানক ভাই নিজেদের জীবন বাজী রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পালন করার জন্য সেনা অফিসার ও তাঁদের পরিবারবর্গদের রক্ষার জন্য পতাকা হাতে নিয়ে বিডিআর সৈনিকদের তাক করার অস্ত্রের সামনে তাঁদের আলোচনার টেবিলে বসিয়ে আত্মত্মসমর্পন করার জন্য চেষ্টা করেছি। সেই সময়ের সার্বিক পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ ছিল তা লেখার মাধ্যমে বুঝানো যাবেনা। উক্ত ভয়াবহ অবস্থায় তাঁদের আত্মসমর্পন করানোর লক্ষ্যে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছি এবং আল্লাহর রহমতে তাঁদের একটি টিম নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যমুনা বাসভবনে নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছি। আমরা যখন পিলখানার গেইটে যাই তখন পিলখানার ভিতরের বাস্তব অবস্থা বা কি ঘটেছে সেই বিষয়ে আমাদের কোন ধারণা ছিল না। বিডিআর সদস্যদের কথায় এবং বাহ্যিক আচরণে ভিতরে কি ঘটেছে তা বোঝার কোন উপায় ছিল না। বিডিআর গেইট থেকে বিডিআর সদস্যদের নিয়ে যমুনায় আসা, যমুনায় আলোচনা শেষে আবার বিডিআর সদস্যদের বিডিআর গেইটে পৌঁছানো পর্যন্ত আমরা দায়িত্ব পালন করেছি। আমরা যখন বিডিআর গেইটে গিয়েছি বিডিআর সদস্যদের সাথে কথা বলে এবং তাঁদের নিয়ে যমুনায় এসে আবার তাঁদের বিডিআর গেইটে পৌঁছে দিয়েছি, সেই সময় উপস্থিত বাংলাদেশের সকল ইলেকট্রনিকস মিডিয়া এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা যা মিডিয়াতে প্রচার করছিল। ২৫ তারিখ রাত আট টা থেকে পরদিন বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত আত্মসমর্পন ও অনেক বিডিআর সদস্য দেওয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার পর সেনাবাহিনী ও সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের অনুরোধে তাঁর সাথে এই প্রথম আমরা পিলখানার ভিতরে প্রবেশ করি।

মাইকিং করি এবং বেশ কয়েকজন সেনা অফিসার ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে আসি। বিডিআর এর ঘটনা নিয়ে লেঃ জেঃ জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয় সেই কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির সহ অন্যান্য সদস্যদের উপস্থিতিতে আমরা আমাদের বক্তব্য প্রদান করেছিলাম। পরবর্তীতে মামলাটি সিআইডি কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেন। আমরা অংশগ্রহণ সম্পর্কিত সিআইডি এর কাছেও বক্তব্য প্রদান করেছিলাম। পরবর্তীতে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করি এবং উক্ত মামলায় আসামীগণ দন্ডিত হন। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি গত ৫ই আগষ্টের পর বিভিন্ন টকশো-তে বা সভায় দুয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নাম উল্লেখ করে মিথ্যা, বানোয়াট, বিকৃত, ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রদান করেছে। আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমার বর্ণিত বিবৃতি বা বক্তব্যের বাইরে আমার কোন অংশগ্রহণ নাই।

আমাদের সাইটে আমরা নিজস্ব সংবাদ তৈরির পাশাপাশি দেশের এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যম থেকে গুরুত্বপূর্ণ খবর সংগ্রহ করে নির্ভুল সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। আমরা সবসময় তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা এবং সঠিকতা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। তবে, যদি কোনো সংবাদ নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকে, তাহলে আমরা আপনাকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যম বা নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য।

এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।
%d bloggers like this: