দেশে গবাদি পশু ও ডিমের দাম আকাশ ছোঁয়া হলেও নারায়ণগঞ্জে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা বেশ ভালোভাবেই পূরণ করছে কেন্দ্রীয় হাঁস প্রজনন খামার। সরকারি এ খামার থেকে খুবই কম মূল্যে হাঁসের বাচ্চা ও ডিম কিনে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছেন যুবসমাজসহ নতুন উদ্যোক্তা। সরকার আরও উদ্যোগ নিলে প্রজনন ও উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
জানা গেছে, শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় ৭.৮৭ একর জমির ওপর ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় সরকারি হাঁস মুরগি খামার। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে এটি কেন্দ্রীয় হাঁস প্রজনন খামারে রূপান্তর করা হয়। এরপর থেকে এখানে শুধুমাত্র হাঁস প্রজনন, ডিম উৎপাদন ও বিক্রি করা হয়। দেশি সাদা ও কালো জাতের পাশাপাশি চীনের জিনডিং, বেইজিং, পিংকি, ইংল্যান্ডের খাকি ক্যাম্পবেল ও ভারতের রানারসহ বিভিন্ন দেশের উন্নত জাতের হাঁস পালন ও বাচ্চা প্রজনন করা হয় খামারটিতে। বর্তমানে ডিম পাড়ার উপযোগী প্রাপ্তবয়স্ক ও কিশোর বয়সী ৩৬০০-৩৭০০ হাঁস পালন করা হচ্ছে।
সারা দেশে জেলাভিত্তিক আঞ্চলিক খামার থাকলেও নারায়ণগঞ্জের এ কেন্দ্রীয় খামারটি দেশের প্রধান হাঁস প্রজনন খামার হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে ছয়দিন পর পর ডিম ফুটানো বাচ্চা বুকিংয়ের মাধ্যমে খামারি ও উদ্যোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হয়। বাজার মূল্যের চেয়ে খুবই কম মূল্যে দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির হাঁসের বাচ্চা ও ডিম বিক্রি হয় বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ ও উদ্যোক্তারা এ খামারে কিনতে আসেন। এখান থেকে হাঁস, বাচ্চা ও ডিম দেশের অধিকাংশ জেলাতেও সরবরাহ করা হয়।
খামারটিতে জনবল সংকটের কারণে ছুটির দিনেও সবাইকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও গত চার দশক ধরে প্রজনন ও উৎপাদনের হার একই অবস্থায় স্থিতিশীল রয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল বৃদ্ধি ও খাবারের বরাদ্দ বাড়ানো হলে প্রজনন এবং উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় হাঁস প্রজনন খামারের উপর পরিচালক এবিএম সালাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা আছে। এখানে নতুন শেড করা যায়। তবে খাবারের নির্দিষ্ট বরাদ্দ আছে। যদি অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল ও খাবারের বরাদ্দ বাড়ানো যায় তবে প্রজনন ও উৎপাদন দ্বিগুন বাড়ানো যাবে।
তবে উৎপাদন বাড়াতে সরকার আগামী বছর ৭০ কোটি টাকা প্রকল্পের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন খামারের উপপরিচালক এবিএম সালাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রজনন ও উৎপাদন তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি দেশের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে এবং বিদেশে রফতানিও করা যাবে।
এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।